প্রিয় পাঠক, আপনি কি যানেন অটিজম দিবস কত তারিখ ? আপনি যদি জাতীয় অটিজম দিবস বাংলাদেশ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের এই নিবন্ধটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আজকে আমি বিশ্ব অটিজম দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পেজ কনটেন্ট সূচিপত্র:আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস কবে ?
- অটিজম দিবস কত তারিখ ?
- আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস কবে ।বিশ্ব অটিজম দিবস কত সালে।
- বিশ্ব অটিজম দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য।
- জাতীয় অটিজম দিবস বাংলাদেশ।আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস কবে ।
- শেষ কথা:জাতীয় অটিজম দিবস বাংলাদেশ।
অটিজম দিবস কত তারিখ ?
২ এপ্রিল বিশ্ব অটিজম দিবস। এইদিনে জাতিসংঘ অটিজমে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের সচেতনতা বৃদ্ধি সম্পর্কে তার দেশগুলোকে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের উৎসাহিত করেন। এইদিনে বিভিন্ন অটিজম সংস্থা গুলো একত্রিত হয়।
এই দিনে আয়োজিত কর্মসূচিতে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতার বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। অটিজমে আক্রান্ত বাচ্চা বা প্রাপ্ত বয়স্ক দের নিয়ে কথা বলা হয়।
সাধারণত ১-৩ বছরের মধ্যে শিশুদের অটিজমের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায়। আবার অনেক সময় ৮/৯ বছরে গিয়ে ও অটিজমের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেতে পারে।
অটিজম হলো স্নায়ু বা স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও পরিবর্ধনজনিত অস্বাভাবিকতা। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের আচারণ স্বাভাবিক বাচ্চাদের মতো নয়। তাদের আচরণ একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ থাকে।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে খেলতে চায় না।তারা একই কাজ বার বার করে। অটিজমে আক্রান্ত বাচ্চারা যেই কাজটি পূর্ব পারত সেই কাজটি ও তারা ভুলে যায়। অনেক সময় দেখা যায় তাদের নাম ধরে ডাকলে তারা সাড়া দেয় না । অনেক ক্ষেত্রে এ সব বাচ্চারা হাঁটাচলা করতে অক্ষম হয়ে থাকে। আবার দেখা যায় হাঁটতে পারলেও স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারছি না। অনেক একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যায়।
অটিজমের কারণ এখনো জানা যায়নি।তবে ডাক্তাররা কিছু কিছু কারণ ধারণা করেছেন। জেনেটিক অথবা পরিবেশগত কারণে বাচ্চারা অটিজমে আক্রান্ত হতে পারে।মানব কোষের অসংগতি পূর্ণ ক্রোমোজোমের কারণে ডাউন সিন্ড্রোম হয়ে থাকে। শিশুর ফ্রাগলি এক্স সিন্ড্রোম এবং অন্যান্য জেনেটিক ডিজঅর্ডার থেকে থাকলে অটিজম হতে পারে।
আবার অনেক সময় মহিলাদের গর্ভবতী অবস্থায় যদি কোন বিষাক্ত পদার্থ বা বস্তু তার শরীরে প্রবেশ করে তাহলেও বাচ্চা অটিজমে আক্রান্ত হতে পারে।
হাম , রুবেলা ভাইরাস ও মাম্পস এর টিকা দেওয়ার ফলে ও অটিজমে আক্রান্ত হতে পারে।মা বাবার বয়সের পার্থক্য যদি বেশি হয়ে থাকে তাহলেও বাচ্চা অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো ২০২২ সালে এসেও অনেকেই জানেন না আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস কবে ।অটিজম দিবস কত তারিখ তা জানা সকলের জন্য ই অতীব জরুরি। অটিজম শিশুরাও আমাদের সমাজেরই অংশ। এজন্য অবশ্যই আমাদের জাতীয় অটিজম দিবস বাংলাদেশ এবং বিশ্ব অটিজম দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে হবে।
আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস কবে ।বিশ্ব অটিজম দিবস কত সালে।
বিশ্ব অটিজম দিবস কত সালে:
২ এপ্রিল কে আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন জাতিসংঘ। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ৬২/১৯৯ ধারা অনুযায়ী মনোনয়ন লাভ করেন আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস। বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসটি বিনা পাশ এবং ভোটে গৃহীত হওয়া একটি দিবস।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্ব সচেতনতা অটিজম দিবসটি পাশ হয় ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর । এবং ২০০৭ সালের ই ১৮ ই ডিসেম্বর বিশ্ব সচেতনতা অটিজম দিবসটি গৃহীত হয়। প্রিন্সেস শিখা মোসাহ বিনতে নাসের আল মিসনদ ও তার স্বামী,কাতারের আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানি বিশ্ব সচেতনতা অটিজম দিবসের প্রস্তাব করেন।সকল সদস্য রাষ্ট্র তাদের এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছিল।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে না। তবে উপযুক্ত চিকিৎসা করালে বাচ্চা কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় বয়স বাড়ার সাথে সাথে কিছুটা অস্বাভাবিকতার সেরে যায়।
অটিজ আমি আক্রান্ত শিশুকে সারিয়ে তোলা অনেকটা মুশকিল। ধৈর্য ধরে উপযুক্ত চিকিৎসা করালে আস্তে আস্তে অনেকটা সেরে আসে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করাতে হবে এবং থেরাপি দেওয়াতে হবে। এই ধরনের বাচ্চাদের খাবারের দিকেও দিতে হবে আলাদা নজর।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের অনেক সময় দেখা যায় তাদের আলাদা কিছু নিজস্ব প্রতিভা থাকে।যেমন:গান গেতে পারা, ছবি আঁকা ইত্যাদি। আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস কবে, বিশ্ব অটিজম দিবস কত সালে তা আমরা ইতোমধ্যে ই পেয়ে গিয়েছি।পরবর্তী ধাপে আমারা বিশ্ব অটিজম দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করব।
বিশ্ব অটিজম দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য।
বিশ্ব অটিজম দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য হলো: "এমন বিশ্ব গড়ি , অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিভা বিকাশিত করি।"
আমাদের সমাজে অনেকেই আছে যারা অটিস্টিক ব্যক্তিদের বোঝা মনে করে। কিন্তু তারা বোঝা নয়। তারা আমাদের মতই মানুষ। তারা আমাদের সমাজের এই অংশ এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। তাদেরকে যত মানুষের সাথে মিশতে দেওয়া হবে ততই তাদের প্রতিভা বিকাশিত হবে।
অটিস্টিক শিশুর আজকের কোন দিক থেকে পিছিয়ে নয়। তাদেরকে অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অটিস্টিক শিশুদের জন্য বিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে। সেখানে তাদের যত্নের পড়াশোনা শেখানো হয়।তারা পড়ালেখা শিখে অন্যান্য স্বাভাবিক বাচ্চাদের সাথে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে।
অটিজমে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের পরিবারকে মানসিকভাবেই শক্ত হতে হবে। তারা যেন কোন ভাবেই তাদের পরিবারের অটিজমে আক্রান্ত সদস্যকে বোঝা মনে না। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমেই ওটিজম শিশুদের কেও প্রতিষ্ঠিত করা যেতে পারে।
অনেক সময় সমাজের মানুষেরা অটিজম শিশুদেরকে নিয়ে তিরস্কার করে। এজন্য আক্রান্ত শিশুর পরিবার ভেঙে পড়ে। আর তাদের অটিজম সদস্যকে বোঝা মনে করে। এক্ষেত্রে অবশ্যই আক্রান্ত শিশুর পরিবারকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং তাদেরকে মানসিকভাবে শক্ত করে তুলতে হবে। কারণ তারাই পারবে পরিবারের অটিজমের আক্রান্ত ব্যক্তিকে সারিয়ে তুলতে। তারাই পারবে তাদের সদস্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে।
এজন্য অবশ্যই তাদের উপযুক্ত খাবার , পরিচর্চা, ওষুধ, থেরাপি ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন হতে হবে। নিয়মিত ডাক্তার দেখাতে হবে। ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী উপযুক্ত পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করতে হবে।
এসব বাচ্চাদের সবার সাথে মিশতে দিতে হবে। তাদের সমবয়সী অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে মিশতে দিতে হবে। চিতে করে তারা অনেক কিছু শিখতে পারবে বুঝতে পারবে। এবং আস্তে আস্তে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করব। হয়তো তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা অনেকটা কষ্টকর। কিন্তু তবুও যতটা সম্ভব সারিয়ে তোলা যায় ততটাই তাদের জন্য ভালো।
বিশ্ব অটিজম দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য বিষয় কি তা আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।পরবর্তী ধাপে আমারা জানব জাতীয় অটিজম দিবস বাংলাদেশ সম্পর্কে।
জাতীয় অটিজম দিবস বাংলাদেশ।আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস কবে ।
এ বছর ১৫ তম জাতীয় অটিজম দিবস বাংলাদেশ এ পালন করা হয়। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অটিজম সচেতনতা দিবস পালন করা হয়। অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তৃতা দেন। অটিজামে আক্রান্ত শিশুদের বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সু্যোগ সুবিধা দিয়েছেন। তাদেরকে আর্থিক ভাবে সাহায্য প্রদান করা হয়।
অটিজম শিশুরা আমাদের বোঝা নয় । বরং তাদেরকে আমাদের সম্পদ মনে করতে হবে। তাদের প্রতিষ্ঠিত করতে প্রথম দায়িত্ব নিতে হবে তাদের পরিবারকে। তাদের পরিবারকে তাদের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
অটিজম শিশুদের অনেক সময় দেখা বিশেষ প্রতিভা থাকে। তাদের বিশেষ প্রতিভা গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।তারা যেন তাদের বিশেষ প্রতিভা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারে সেদিকে তাদের পথ বের করে দিতে হবে।
শিশু অটিজমের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পাওয়ার শুরুর দিকেই তাদের উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করলে ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।আর যত দেরি হবে ততই শিশুর জন্য খারাপ হবে। এজন্য শুরুর দিক থেকেই চিকিৎসা প্রদান করতে হবে। একটি শিশু যখন বেড়ে ওঠে তখন থেকেই তার পরিবারের তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।বাচ্চা কিরকম আচারণ করছে সেসব দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সমাজের কোনো অটিস্টিক শিশুকে নিয়ে তিরস্কার করা যাবে না। বরং তাদেরকে যেভাবে সম্ভব সাহায্য করতে এগিয়ে যেতে হবে।অটিস্টিক শিশুর পরিবারকে মানসিক ভাবে সাপোর্ট করতে হবে।যেন তারা ভেঙে না পড়ে।গরীব অটিস্টিক শিশুদের উপযুক্ত সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। তাদেরকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করতে হবে। এভাবেই আমারা সবাই মিলে এগিয়ে যেতে পারব।
শেষ কথা:জাতীয় অটিজম দিবস বাংলাদেশ।
বন্ধুরা আজকে আমর আলোচনার বিষয় গুলো ছিল অটিজম দিবস কত তারিখ ,জাতীয় অটিজম দিবস বাংলাদেশ,বিশ্ব অটিজম দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য,আন্তর্জাতিক অটিজম দিবস কবে, বিশ্ব অটিজম দিবস কত সালে।
আশাকরি পোস্টটি পড়ে আপনার অনেক ভালো লাগলো। এরকম আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট পড়তে আমাদের অর্ডিনারি আইটি ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে আসুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আজকে এই পর্যন্তই।
Post a Comment